মোঙ্গল সাম্রাজ্যের উত্থান এবং হুলাগুর নেতৃত্বে বাগদাদের পতন
ঘটনার বিবরণ:
হালকা ঘন মেঘে আচ্ছন্ন আকাশ। সাল ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ। তখনকার ইসলামী বিশ্বের রাজধানী বাগদাদ ছিল এক সমৃদ্ধ শহর। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সংস্কৃতির অপার সম্ভার নিয়ে এই শহর মধ্যযুগীয় বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এরই মাঝে মোঙ্গল বাহিনী শুরু করল তুমুল এক আক্রমণ। মোঙ্গল সেনাপতি হুলাগু খান, যিনি ছিলেন চেঙ্গিস খানের নাতি, তৎকালীন ইসলামী খলিফা আল-মুস্তাসিমকে পরাস্ত করে বাগদাদ দখলে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন।
বাগদাদের হাজার হাজার মানুষের মধ্যে তখন এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। শহরের চারদিকে সুরক্ষিত দেয়াল থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রতিরোধ শক্তি ছিল হুলাগুর বিশাল বাহিনীর সামনে অপ্রতুল। সাত দিন ধরে মোঙ্গলরা শহরের দেয়াল ভেঙে প্রবেশ করার জন্য লাগাতার আক্রমণ চালায়। শেষ পর্যন্ত দেয়াল ভেঙে শহরের মধ্যে প্রবেশ করতেই চলে এক নির্মম হত্যাযজ্ঞ। ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেন যে, প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ এই যুদ্ধে প্রাণ হারায়, যা মধ্যযুগীয় ইতিহাসের এক ভয়াবহ ঘটনা।
বাগদাদের গ্রন্থাগার, যা ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম, সেখানকার অমূল্য পাণ্ডুলিপি ও বই পুড়িয়ে দেয়া হয় বা ধ্বংস করা হয়। সেই সময়ের অনেক বিদ্বান, পণ্ডিত, বিজ্ঞানী এবং সাহিত্যিক এই হত্যাযজ্ঞে নিহত হন বা নিখোঁজ হয়ে যান।
এই ঘটনা ইসলামি সভ্যতার অগ্রগতির এক বিরাট ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ঘটনার পর বাগদাদ আর কখনোই তার পুরনো জৌলুস ফিরে পায়নি।